peace pagoda pokhara পিস প্যাগোডা পোখারা

পোখারা থেকে কাঠমান্ডু 

সকালে ভোরে উঠে হোটেলের বিল পে করে ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলাম বাস স্ট্যান্ড। আমি আমার জীবনে এতো নীরব বাস স্ট্যান্ড কখনো দেখি নাই। আমাদের দেশে তো বাস স্ট্যান্ড এ হর্ন, লোকজনের চিল্লা চিল্লি আর ডাকাডাকি তে কান পাতা দায়। এখানে দেখলাম চুপ চাপ ২০ ২৫ টা বাস দাঁড়ায় আছে, যে যার বাসে সুন্দর উঠে যাচ্ছে। সামান্য পরিমাণ ও হট্টগোল নাই।
বাস ছাড়ল সময়ের দশ মিনিট পর। আরও যেটা ভালো লাগল যে কোনও অহেতুক হর্ন নাই, বাস ড্রাইভার আমাদের হানিফের মতো উড়ায় নিয়ে যাচ্ছে না। শান্ত দীর স্থির ভাবে চালাচ্ছে। আমি শুধু ভাবলাম আমাদের হাইওয়ের ড্রাইভার রা এমন হলে না জানি কত দূর্ঘটনা কমে যেত আমাদের দেশে। সাধারণত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লাগে কাঠমান্ডু পৌছাতে। এই ৮ ঘণ্টার বাস জার্নিও কোনও ট্যুরের চেয়ে কম না। কারণ এই ৮ ঘণ্টাই আপনাকে যেতে হবে বিশাল সব পাহাড়ের মাঝ দিয়ে। কখনো একে বেকে বিপজ্জনক সব বাক নিয়ে উঠে যেতে হবে,কখনো বা পাহাড়ি নদীর পাশ দিয়ে। এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে যে কখন ৮ ঘণ্টা পার হয়ে যাবে টেরই পাওয়া যাবে না।
pokhara tourist bus stop পোখারা ট্যুরিস্ট বাস স্টপ

পোখারা ট্যুরিস্ট বাস স্টপ

কাঠমান্ডু পৌছালাম বিকাল ৩ টায়। তাড়াতাড়ি একটা ট্যাক্সি নিয়ে দৌড় দিলাম এয়ারপোর্টের দিকে। সব ঝামেলা শেষ করে প্লেনে উঠে বসলাম। আর ভাবতে থাকলাম কোথায় ছিলাম এই কটা দিন, আর কাল কোথায় থাকব। আবার সেই ৯ টা ৫ টা অফিস কাল থেকে, সেই বিজি লাইফ। এইসব ভাবতে ভাবতে পাইলট ঘোষণা দিল যে বাম পাশে এভারেস্ট এর চূড়া দেখা যাচ্ছে।
অমনি সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ল বাম দিকে দেখার জন্য, অনেকে ছবি তুলতে লাগল। আমি ছিলাম ডান পাশে। তাও গেলাম না। আমি এভারেস্ট দেখব, তবে এভাবে না। সামনা সামনি তার সামনে দাঁড়িয়ে, ওখানে বসেই পণ করলাম এর পর এভারেস্ট বেস ক্যাম্প যাব। এখানে একবার আসলে বারবার আসতে ইচ্ছা হবে, এ সৌন্দর্য্য যে একবার দেখে মন ভরবার নয়। নেপালে বার বার আসতেই হয়। তাই তো তাদের এয়ারপোর্টে বড় বড় করে লেখা – ‘Once is not enough’.
  1. ভাই আপনার অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ট্রেক কাহিনী সম্পূর্ন পড়লাম… পড়েই গায়ের রোম শিহরিত হয়ে উঠল। হয়তো যাওয়া হয়ে উঠবেনা তবে রাতে নিশ্চিত কল্পনায় ভেসে উঠবে আপনার অভিজ্ঞতা গুলো। সম্পূর্ন পড়ার পরে তাই কমেন্ট করছি… ককে কথায় অসাধারণ…

    • আপনার ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগলো। আর যেতে পারবেন না কেন? পুরোটাই ইচ্ছার ব্যাপার। জীবনে একবার নেপাল যাওয়াটা আসে, আমরা যে কত ক্ষুদ্র তা বোঝার জন্য।

    • ক্যাম্পিং করা যায়। কিন্তু আমি ব্যাক্তিগত ভাবে কোথায় গেলে লোকাল লোকদের সার্ভিস নিতে পছন্দ করি, এতে করে তাদের আয় রোজগারের একটা ব্যাবস্থা হয়।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।