নরওয়ে – ভাইকিং এর দেশে ১
বের্গেন। রাজধানী অসলো র পরে,নরওয়ের সবচেয়ে বড় শহর। একে ইউরোপের চেরাপুঞ্জি ও বলা যায়। কারণ বের্গেনে ইউরোপের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত দেখা যায়। এসে হাতে নাতে এর প্রমাণ ও পেয়ে গেলাম। এয়ারপোর্ট থেকে যে বৃষ্টি শুরু হইসে, তার আর থামার নাম গন্ধ নাই। আজ সকালে বেরেগেন ছেড়ে আসা পর্যন্ত যা কন্টিনিউ ছিল। এর মধ্যেই শহর টা ঘুরে দেখার চেষ্টা করি।
এদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টপ নচ। এয়ারপোর্ট থেকে সিটি সেন্টার এ ডাইরেক্ট ট্রাম সার্ভিস আছে। নরওয়ে তে এদের বলে ‘ByBanen’। এতে করে সোজা ব্রিগেন চলে গেলাম। এখানে আছে বের্গেন পোর্ট। নরওয়ের সবচেয়ে ব্যস্ততম। বছরে প্রায় 300 ক্রুজ শিপ লাখ লাখ পর্যটক নিয়ে আসে। আমি টুরিস্ট সিজন এর একটু আগে যাওয়ায় সব মুটামুটি ফাঁকা ই ছিল বলা যায়। বড় শহর হলেও কংক্রিট এর বিল্ডিং এর চেয়ে কাঠের বাড়ির সংখ্যাই বেশি। পাহাড়ের ঢালে , নানান রঙের, কাঠের তিন কোনা ছাদ ওয়ালা বাড়ি গুলা শহরের সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়ে দেয়।
কোন কারণে এই শহরের লোকজন সব দৌড়ের উপরে আছে মনে হল। মানে সমানে বৃষ্টি পড়তেসে, এর মধ্যে কানে একটা হেডফোন গুঁজে, জগিং করতেসে। মাঝে গুণে দেখলাম, 1 মিনিটের মধ্যে প্রায় 15 জন জগিং করতে করতে আমাকে ক্রস করল। আর যারা রাস্তায় নাই, তারাও জিমে ট্রেডমিলে সমানে দৌড়ায় যাইতেসে।
আগুন এর সাথে এই শহরের একটু বেশি সখ্যতা আছে বলা যায়। সেই 1100 সাল থেকে শুরু করে, প্রায় কয়েকবছর পর পরই এখানে বড় বড় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে 1702 সালে, প্রায় 90% বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 1756 সালে প্রায় পনের শ ঘর পুড়ে যায়। এর মধ্যে লেটেস্ট আগুন লাগার ঘটনা 1956 সালে। ছবিতে আমার পিছনে যে রং চঙ্গা বাড়ি গুলো আছে, সেগুলো তখন পুড়ে গিয়েছিল। যা পরে আবার রিবিল্ড করে।
বেরগেন শহর কে চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছে 7 টা পাহাড় । এর মধ্যে সবচেয়ে পপুলার হচ্ছে ফ্লয়েন (Fløyen), এবং এই 7 টার মধ্যে সর্বোচ্চ।” ফ্লয়বানেন ” ফিনিকুলার দিয়ে 10 মিনিটেই এর চূড়ায় চলে যাওয়া যায়। সেখান থেকে পুরো শহর এর সুন্দর একটা প্যানরমিক ভিউ পাওয়া যায়। ইচ্ছা ছিল, সেখান থেকে ট্রেক করে নিচে নামার, প্রায় সাড়ে তিন কিলো। সে জন্যে সুন্দর রাস্তা করে দেয়া আছে। কিন্তু বৃষ্টির জন্যে সেটা এর হলো না।