নরওয়ে – ভাইকিং এর দেশে ২
বের্গেন থেকে অসলো পর্যন্ত একটা ট্রাভেল রাউট আছে। যেটা “নরওয়ে ইন এ নাটশেল” নাম এ বেশি পরিচিত। এর কারণ, এখানে কিছু অংশ বাস, এরপরে ফেরি এবং সবশেষে ট্রেনে যাওয়া লাগে। এর মধ্যে একটা ট্রেন আবার “ফ্লামসবানা”, যেটা এরা দাবী করে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ট্রেন জার্নি গুলার একটা। কয়েক ধরনের ট্রান্সপোর্ট ইউজ করার কারণে , নরওয়ের সব কিছুর ই একটা ফ্লেভার পাওয়া যায় বলে এই নাম দেয়া । বের্গেন থেকে অসলো যদিও ডিরেক্ট ট্রেনে যাওয়া যায় , কিন্তু তাতে সময় কম লাগলেও ঠিক ঠাক সব জায়গা এঞ্জয় করা যায় না. এবারের ট্যুর এ এই রাউট টা কাভার করার চেষ্টা করব ,তাও ৩ দিন এ. একটু আস্তে ধীরে, চিল করতে করতে যাবার প্ল্যান।
ফার্স্ট লেগে ‘বের্গেন’ থেকে যেতে ‘হবে গুদভাঙ্গেন’। সেখানে রাতে থাকব। বের্গেন থেকে “ভস” নামক একটা জায়গায় ট্রেনে যেতে হবে ,বাকিটা বাস এ। কিন্তু রেল লাইনে কাজ চলতেসে দেখে ,দুইটাই বাস এ যেতে হবে। ট্রেনে গেলে ভালো লাগতো, শুনেছিলাম এই ট্রেন জার্নি টা অনেক সুন্দর। কিন্ত বাস এ রাস্তার পাশে সৌন্দর্য দেখে সে আক্ষেপ আর রইল না। পাহাড়ের পাশে মসৃন রাস্তা, কোন ঝাকি খাওয়ার বালাই নাই। পাশ দিয়ে ছোট পাহাড়ি নদী আমাদের সাথে চলছে। মনে হল কিছু অল্টিচ্যুড ও সাথে বেড়ে গিয়েছে। কারন পাশে পাহাড়ের গায়ে অল্প সল্প বরফ দেখা যাচ্ছে। নদীর পানির পাশের কিছু অংশ ও বরফ হয়ে আছে।
রাস্তায় একটু পর পর বড় বড় টানেল। টানেল গুলো পাহাড়ের এক পাশ দিয়ে ঢুকে আরেক পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। এগুলো না থাকলে প্রত্যেক টা পাহাড়ের বেয়ে উঠে ক্রস করা লাগত। এতে ট্রাভেল টাইম বেড়ে যেত অনেকটা। আর প্রত্যেকটা টানেল ক্রস করার পর, আশে পাশের ভিউ পুরো চেঞ্জ হয়ে যায়। একটু পর পর মনে হয় যেন নতুন কোন জায়গায় চলে এসেছি। বাস এ বসেই যতখানি পারি কিছু ছবি তুলে নিলাম।
এভাবে দেখতে দেখতে প্রায় দেড় ঘন্টা পরে চলে আসি ভসভাঙ্গেন। নরওয়ে তে ট্রেন বাস সব একদম টাইম ধরে চলে। যতটা বাজার কথা আসতে আসতে, ঠিক ততটার সময় ই আমাদের নামায় দিল। পরের বাসের আগে হাতে প্রায় ৫০মিনিট সময় আছে। তাই একটু আশে পাশে ঘুরতে বের হলাম।
বাসস্টপ এর সাথেই একটা বিশাল লেক। নাম ‘ভাংসভাটনেট’। নামটা যতটা কাটখোট্টা, দেখতে ঠিক ততটাই সুন্দর। চারিদিকে পাহাড় দিয়ে ঘেরা। আর লেকের পাশে কার্পেটের মতো সবুজ ঘাস। এতটাই সুন্দর করে মেইনটেইন করা যে পাড়া দিতেই খারাপ লাগছিল। আমার ছেলে ঘাস পেয়ে শুরু করল দৌড়। এখানে কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে, উঠে পড়ি বাসে, পরের গন্তব্য গুদ্ভাঙ্গেন।